Books

বিচলিত সময়
(Bicholito Somoy)

মুঘল অধিকৃত সুবে-বাংলা একদা ছিলো এক সম্পন্ন জনপদ। এখানকার মানুষগুলির জীবন জুড়ে ছিলো নিরবিচ্ছিন্ন প্রশান্তি আর সুখ সমৃদ্ধি। মসলিন নামক মায়াবী তন্তুতে যেন গাঁথা ছিলো মানুষগুলির জীবন। মুঘল সাম্রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র দিল্লি-আগ্রার মানুষগুলি যেমন ভালোবাসায় আবেগে অভিভূত হয়েছে, প্রেমের কুহকে দিশেহারা হয়েছে, আবার সঠিক পথ খুঁজে পেয়েছে, তেমনি মুঘলদের সুবেদার শাসিত সুবের মানুষগুলির জীবন আবর্তিত জাগতিক আর মানবিক চালিকা শক্তি দ্বারা। ‘বিচলিত সময়’ ইতিহাস আশ্রিত একটি আলেখ্য। ইতিহাস আশ্রিত কিন্তু ইতিহাস নয়। ইতিহাস ঘটনা পরম্পরায় খতিয়ান। আর উপন্যাস ঘটনার মোড়কে মানব-মানবীর হৃদয়মথিত চিত্রায়ণ। উপন্যাসটির পটভূমি বিশাল এবং ব্যাপক। আর সেই পটভূমি বাঙ্ময় হয়েছে কয়েকজন মানব-মানবীর পদচারণায়। বিচলিত সময়ের প্রধান চরিত্রগুলি ইতিহাসের মোড়ক উন্মোচন করে জীবন্ত হয়ে উঠেছে লেখকের লেখনির কুশলতায়। ইতিহাসের আলো আঁধারি থেকে উঠে আসা কবি সৈয়দ জাফর, দেবদাসী নর্তকী রশমী, অহম রাজকন্যা নাঙছেন গাভারু, পর্তুগিজ কুঠিয়ালের বাঙালি ঘরণী মারিয়া প্রভৃতি চরিত্রকে যেন আমাদেরই আপনজন বলে মনে হয়। আর নতুন করে পাঠককে নিয়ে যায় আমাদের অনেক চেনা লালবাগ দুর্গ আর পরী বিবির ছায়াচ্ছন্ন দিনগুলিতে। অনুপুঙ্খ বর্ণনা সতেরোশ’ শতকের বাঙালি সমাজের চালচিত্র বইটির উপরি পাওনা। সুদূর আমেরিকায় বসে লেখা এই বইটি লেখক আবদুন্ নূরের মেধা-মননের স্বাক্ষর হয়ে থাকবে।

প্যাগাসাস
(Pegusus)

প্যাগাসাস এক বিশ্বাসের রূপক। একদা মুক্ত এক বর্ণ স্বেচ্ছায় শৃংখলিত হল সাত সাগর তের নদী পেরিয়ে এসে এক অজানা তেপান্তরে। প্যাগাসাসে আমি সেই শৃংখলিত ভারতীয় বর্ণের যাঞ্চাকে প্রকাশ করতে চেয়েছি। প্যাগাসাস হল রূপকথার সেই উড়তে চাওয়া পঙ্খীরাজ। পাখা রেখেও যে ওড়ার ক্ষমতা আহরণ করতে পারেনি। আট লক্ষ অধিবাসীর ছোট দেশ গায়ানা। দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর আটলান্টিক সমুদ্রের উপকূলে। গর্বিত গায়ানীজরা ছয় জাতির দেশ বলে। পাঁচ জাতি এসেছে বাইরে থেকে। ভারতীয়, নিগ্রো, পর্তুগীজ, চীনা, ব্রিটিশ। আদিবাসী হচ্ছে আমেরিন্দিয়ান। দেশ ছোট। অথচ উত্তর পঞ্চাশ থেকে ক্রমান্বয়ে বিশ্ববার্তায় প্রথম সারিতে গায়ানা স্থান পেয়েছে। ধর্মঘট, দাঙ্গা, অসহযোগ, স্বৈরাচার, নির্বাচনে প্রতারণা, দলীয় বিভেদ। কী নয়। বিরোধের পর বিরোধ চলেছে দেশে। দলে দলে, বর্ণে বর্ণে। অথচ বিরোধ করেছে ধর্ম নিয়ে নয়। দাঙ্গা হয়েছে রাজনৈতিক বিশ্বাস নিয়ে। কে কম্যুনিষ্ট, কে মার্ক্সসিস্ট, কে ক্যাপিটালিস্ট, কে সোস্যালিস্ট। প্রশ্ন উঠেছে স্বাধীন গায়ানার ক্ষমতা কার হাতে যাচ্ছে। সে কি সন্দেহবাদী ভারতীয়, উগ্র ও রুক্ষ নিগ্রো, না সুযোগ সন্ধানী চীনা কিংবা লোভী পর্তুগীজ, অথবা শৃগালধূর্ত ব্রিটিশ? কিংবা অবিশ্বাসী আমেরিন্দিয়ান? প্যাগাসাসের আলেখ্য যদিও কাল্পনিক, ঘটনা ইতিহাস আশ্রিত। কিন্তু রঞ্জিত নয়। কাহিনীর রচনাকাল মে ১৯৮৩, এবং মার্চ ও মে ১৯৮৬। লেখা হয়েছে জর্জটাউনে, ওয়াশিংটনে, জেনেভায় ও আদিস আবাবায়।

উত্তরণ
(Uttaran)

সরল বৃত্তে আবদ্ধ মানুষের জীবন কী যে এক অমোঘ নিয়তি-নির্দেশে নানা রকম জটিল টানাপোড়েনে জড়িয়ে পড়ে, আমরা কেউ জানি না। জানে নি শামীনাও। নারীর শাশ্বত জীবনাচরণকে যে জেনেছিলো পরম গন্তব্য হিসেবে, সে ঘটনা পরম্পরায় হারিয়ে গেলো অন্তিনীয় ঘূর্ণাবর্তে। তারপরেও সে পরাজিত হয় নি।যখন সে পরাজয় মেনে নিতে চাইলো ক্লান্তির অবয়বে, কী আশ্চর্য! পরাজয় তার কপালে কলঙ্কের তিলক না পরিয়ে তাকে করলো বিজয়িনী। উত্তরণ উপন্যাসে অলৌকিক বিষয় আছে, কিন্তু নেই অলৌকিকতা। উপন্যাসটির সৌন্দর্য, কিম্বা বলি, মহত্ব, এখানেই বিধৃত। ইয়ারমার সন্তান-বুভুক্ষা আর শামীনার সন্তান-বুভুক্ষা মিলেমিশে একাকার হয় তথাকথিত বৈশ্বায়নের যোগসূত্রে।

শূন্য বৃত্ত
(Shunno Britto)

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাঙালীদের জীবন-যাপন প্রণালী ও প্রক্রিয়া ড. আবদুন্ নূর শূন্যবৃত্ত উপন্যাসে আশ্চর্য মমতা ও ভালবাসার সঙ্গে চিত্রিত করেছেন। সাপ্তাহিক রোববার-এর পাতায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের সময় আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল শূন্যবৃত্ত। ওয়াশিংটনে লেখকের ডাকবাক্সে সে-সময়ে প্রতিদিন জমা হ’ত বাংলাদেশের চিঠি। নানা প্রশ্ন, নানা জিজ্ঞাসা।

রক্তস্নাত একুশে
(Raktasnato Ekushey)

একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২, সকাল ১১টা। ঘর পালিয়ে উপস্থিতত হয়েছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় বাংলা-ভাষা সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত মহা ছাত্রছাত্রী সমাবেশে। আমি তখন ঢাকার আরমানিটোলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
প্রত্যক্ষ করেছি মাতৃভাষা বাংলা-ভাষার স্বীকৃতির জন্যে অগ্রজ ছাত্রছাত্রীদের সংগ্রাম ও ত্যাগ। দেখেছি কালো লোহার ফটক খুলে দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের কাতারে কাতারে কালো পিচের রাস্তায় মিছিলে শামিল হওয়া। দেখেছি আপামর বাঙালির অংশী আপন ভাষা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে।
দীর্ঘ ৭৩ বছরে পেরিয়ে গেলেও সেই দৃশ্য সেই স্মৃতি এখনো আমার অমলীন। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ নানা অনুরোধসত্ত্বেও লিখতে চাইনি। মনে হয়েছে সেই অভিজ্ঞতা আমার সত্তার সঙ্গে জড়িত। একান্ত আমারই। কারণ একুশের ফেব্রুয়ারির রাতে সংকল্প করেছি বাংলা ভাষাকে ভালোবাসো, রক্ষা করবো এবং কলম ধরবো।
অধুনা কিছু শুভানুধ্যায়ী দাবি করলেন আমি যেন আমার প্রথ্যক্ষ্যদর্শীর বিবরণ স্বকথনে গ্রথিত করি। আত্মপ্রচারের প্রয়োজনে নয়। বরং ইতিহাসের একটি ফলকরুপে।

99 Asma'ul Hus'na
(Thy Names)

'99 Asma'ul Hus'na' (Thy Names) is a rare contribution among the few books on the topic of the Beautiful Names of Allah in the English language. Even a cursory reading of it shows what a serious labor of love it has been for the author. Dr. Noor has constructed a beautiful mosaic reflecting the exactitude of an analyst, probing attention of a seeker, empathetic understanding of a lover and the articulation of a poet. The fountainhead of the author's grasp of the material is a rich tapestry of the relevant verses of the Quran and the sayings of the one perfect human being selected to receive and deliver the Message of the Supreme Creator. Clearly, both sources have provided a strong platform for the author to grasp and articulate the intuitive dimensions of the Beautiful Names of Allah. He has spread a generous table of sumptuous morsels from the blessings of Al-Wadud and has invited the readers and the seekers to partake from it with wonder and joy. May his Merciful Lord reward him for his labor of love.'

আল্লাহর ৯৯ নাম
(99 Asma'ul Hus'na)

আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল শুধু একটি কারণেই। আমরা তাঁর ইবাদত করব। প্রতি দিবস-রাত্রির কার্যক্রমে। আমরা যেন তাঁকে অনুভব করি, তাঁর বিদ্যমানতা স্বীকার করি, তার করুণাধারায় সিক্ত হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এবং তাঁর মাহাত্ম্যকে ঘোষণা করি। বারবার তাঁর সব সুন্দর নাম ধ্বনিত করি। প্রতিটি সুন্দরতম নাম শুধু তাঁর। যখন তাঁকে সন্ধান করি, স্বীয় অন্তঃকরণে অনুভব করি, অন্তরের অন্তস্থলের প্রতিটি ছন্দে পল-অণুপলে ধ্বনিত হচ্ছে তাঁর সুন্দরতম নামগুলো। যেকোনো ভাষায় কথা বলি, যেকোনো সমাজে বাস করি, যেকোনো বিশ্বাসে বিশ্বাস করি, মনুষ্য হৃদয়ে গ্রথিত রয়েছে সকল সুন্দরতম নাম। শুধু বারবার মুখে স্মরণ করার জন্য নয়। বরং নিত্যদিনের কাজের মেলায় সেই সব গুণের প্রতিফলন হবে বিশ্বমানবতার বন্ধন প্রয়াসে। প্রতিটি মানবসত্তা অনুভব করছে তাঁর সুন্দরতম প্রবৃত্তি। তাঁর প্রদীপ্ত উজ্জ্বল ডাক। সে ডাকে সাড়া দিতে প্রস্তুত হতে হবে শুভ ও মঙ্গলময় কর্মের মাধ্যমে।

Talk to us

Have any questions? We are always open to talk about your business, new projects, creative opportunities and how we can help you.